স্পোর্টস ডেস্ক: সিলেট টেস্টে জয়ের সুঘ্রাণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। শেষ দিন ৩ উইকেট তুলে নিতে পারলেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২ টেস্টের প্রথম টেস্ট জিতে যাবে শান্তর দল। বাঁ-হাতি তাইজুল ইসলামের স্পিন ঘূর্ণিতে বেসামাল কিউই ব্যাটাররা।
প্রথম ইনিংসে ১০৯ রানে ৪ উইকেট পাওয়া তাইজুল দ্বিতীয় ইনিংসেও বল হাতে দুর্বার। আজ শুক্রবার নিউজিল্যান্ড ব্যাটাররা তার বল খেলতে গিয়ে ঘেমে নেয়ে উঠেছেন।
২০ ওভার বল করে মাত্র ৪০ রানে ৪ উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন তাইজুল। বাংলাদেশ যেমন ম্যাচ জয়ের খুব দ্বারপ্রান্তে, একইভাবে বড় সুযোগ আছে তার এই ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করার।
অতি নাটকীয় কিছু না ঘটলে ম্যাচে বাংলাদেশের জয় প্রায় নিশ্চিত। সে জয়ের আগাম পূর্বাভাস নিয়েই তাইজুল বলে ওঠেন, ‘বড় দলকে হারানোর মজাই আলাদা। এখনও জিতি নাই, তবে ইনশাআল্লাহ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বড় দলকে হারালে আত্মবিশ্বাস বাড়ে, দল বদলে যাওয়ার আভাস থাকে। পুরো বছর যেন এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে পারি। কয়টা ম্যাচ জিতব বা জিতব না জানি না, তবে বাংলাদেশকে যেন ভালো কিছু দিতে পারি।”
সাকিব আল হাসান নেই। সাকিবের অনুপস্থিতিতে তার লক্ষ্য ও পরিকল্পনা কী? তাইজুলের জবাব, ‘আরেকজনেরটা তো আমি করতে পারব না। আরেকজন আবার আমারটা করতে পারবে না। আমি আমার প্ল্যানেই থাকি। সাকিব ভাই থাকুক আর না থাকুক, আমার সাথে আরও স্পিনাররা আছে। গেম বাই গেম প্ল্যান এ রকম হয়- কেউ উইকেট নিবে কেউ রান আটকে রাখবে। আমি রান আটকালে হয়ত মিরাজ বা নাঈম উইকেট পেত। কেউ থাকুক আর না থাকুক, আমরা ভালো খেলছি কি না এটাই জরুরি।’
ওয়ানডেতে সুযোগ না পাওয়া নিয়ে কিছুটা আফসোস রয়েছেই তাইজুলের। তিনি বলেন, ‘(ওয়ানডেতে সুযোগ নেই) আফসোস তো সবারই থাকে। আমারও আফসোস আছে। কাল তো দল দিয়েছে, হয়ত দেখেছেন। আমি এটা নিয়ে কথা বলতে চাই না। সকালেও উইকেট এত কঠিন মনে হচ্ছিল না। আমাদের বোলাররা অনেক দুর্দান্ত বোলিং করেছে। ওদের বড় ব্যাটারদের দ্রুত হারানোয় চাপে পড়েছে। বলব না উইকেট খুব খারাপ।’
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন তাইজুল। তিনি বলেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে সে (শান্ত) ভালো, অনেক ডিসিশনই নেয়। যেখানে আটকে যায় আমাদের সিনিয়র ক্রিকেটার যারা আছে, মুশফিক ভাই আছে, সৌরভ আছে- এমনকি আমাকেও বলে। যেখানে আটকে যায় সেখানে আমরা সাহায্য করার চেষ্টা করি। আর তার তো একটা নলেজ আছেই। ৫-৬ বছর ধরে খেলছে, তার মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইয়ে (অভিজ্ঞতা) আছে। আমার মনে হয় সে খারাপ না, ভালো আছে।’
বিশ্বকাপে দারুণ ব্যর্থ বাংলাদেশ দল। সেই ব্যর্থতার আবহ কি টেস্ট সিরিজেও বিরাজমান কি না? জানতে চাইলে তাইজুল বলেন, ‘আবহের কথা বলতে পারব না। যেহেতু বিশ্বকাপে আমি ছিলাম না। আমি যখন এসেছি, আমরা চেষ্টা করেছি এক হয়ে থাকতে। সবাই যেন সবাইকে বোঝে, চেনে। আলহামদুলিল্লাহ খারাপ না।’
উইলিয়ামসনকে দুই ইনিংসেই আউট করেছেন তাইজুল ইসলাম। এ নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘খুশি অখুশির কিছু নাই। একজন খেলোয়াড় যখন ৮-১০-১২ বছর খেলে, অবশ্যই অভিজ্ঞতা থাকে। ক্রিকেটে এই অভিজ্ঞতা অনেক কাজে লাগে। অধিনায়ক কোচের উপর নির্ভর করে আমাকে কতটা প্রায়োরিটি দিচ্ছে। প্রায়োরিটি দিলে অবশ্যই চেষ্টা করব সাহায্য করার। সবসময় আমার দরজা খোলা। যেকোনো দরকার হলে আমি করব। প্রায়োরিটি পাই না তাই না। পাই। অনেকে অনেক সময় বলে কি করা যায়। আমি পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করি।’
টেস্ট সিরিজের আগে কী ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন? জানতে চাইলে তাইজুল বলেন, ‘তেমন কোনো প্রস্তুতি আমি নিই না। প্রস্তুতি একটাই থাকে একটা জায়গায় বল করা। সেখানে কতটা ভ্যারিয়েশন মানিয়ে নিতে পারলাম সেটাই ইম্পরট্যান্ট। আলহামদুলিল্লাহ ভালো লাগে। বাট বুড়া বানায়ে দিয়েন না আবার!’